Wednesday, August 27, 2014

ব্লগারের সাফল্য লাভের ১০টি মূলমন্ত্র

ব্লগারের সাফল্যের মূলমন্ত্র

আমি এর আগে ব্লগ কি ও ব্লগার কি এ নিয়ে আলোচনা করেছি। নতুন করে এটি আর আলোচনা করতে চাইনা। কমবেশি আমরা যারা অনলাইনে টাকা আয় করতে চাই তারা সকলই ব্লগ নিয়ে মাতামাতি করে কিন্তু ক' জনে ব্লগ নিয়ে সাফল্য পায়। সত্যি কথা কি আমরা টাকা আয় করতে চাই ঠিকই কিন্তু বুঝেশুনে লক্ষ্য স্থির না রেখেই পা বারাই। ধরুন বিজ্ঞাপনে লেখা আছে যে, বাড়ি বসে আয় বা ঘড়ে বসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করুন। আর তখনি অনেকে ছোটা ছুটি করে কাজটি করার জন্য, অনেকে ওর মধ্যে কাজে লেগেও জায়, কিন্তু কিছু দিন পর লক্ষ্য করা যায় ১০০ জনের মধ্যে ৭০ জন কেটে পরে। আর তারপরও যে ৩০ জন থাকল তার মধ্যে যারা লেগে থাকে তারাই সাফল্য পায়। তাই কাজে ধর্য্য না থাকলে সাফল্য পাওয়া কঠিন। পরিশ্রমই সাফল্যে মূল চাবি কাঠি। আজ আমি এই পোস্ট এর মাধ্যমে জানব কিভাবে একজন সফল ব্লগার হওয়া যায়, সে সম্পর্কে কিছু টিপস-
ব্লগারের সাফল্য

১। ব্লগের মান উন্নয়ন করুনঃ-

সবার আগে আপনাকে ব্লগের মানের উপর নজর দিতে হবে। ব্লগের মান উচু না হলে অযথা অর্থ উপার্জনের পেছনে ছুটলে কিছু হবে না। ব্লগের মান উচু করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে, আপনার ব্লগই বলে দিবে এখন বিজ্ঞাপন দেবার সময়। নতুন ব্লগ থেকে কক্ষনই আয় করা যায়না ।কেননা অ্যাডসেন্স কক্ষনোই নতুন ব্লগ এপ্রুভ করে না।

২। নিজের লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করুনঃ-

আমরা সবাই দক্ষ ব্যক্তিকে আগের সারিতে রাখার চেষ্টা করি। ব্লগের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। লেখার দক্ষতার উপরে নির্ভর করে আপনি কি ধরনের পর্যায়ে যেতে পারেন। একজন সফল ব্লগার তার লেখার মধ্যেই প্রতেক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবকিছু ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাই লেখার দক্ষতা না থাকলে আপনি ব্লগিং জগতে সফল পাবেন না। সর্বদা চেষ্টা করুন নিজের মানকে আরেকটু ভালোপর্যায়ে নিয়ে যেতে। লিখতে থাকুন দক্ষতা একদিন হবেই। কেননা দক্ষতা একবারে আসবে না।  

৩। নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যকঃ-

নিয়মানুবর্তিতা প্রত্যেক কাজকে সাফল্য এনে দেয়। ব্লগের ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু একজন সফল ব্লগারকে প্রয়োজনের তুলনায় আরও বেশি সুশৃঙ্খল হতে হবে। আপনি যদি সফল ব্লগার হতে চান তবে আপনাকে একটি সময় সারণী অনুসারে প্রতেহ কাজ করতে হবে। কারন একজন ব্লগারের কাজ শুধু ব্লগ লেখাই নয় তাকে অন্যের লেখা ব্লগে অংশ নিতে হবে। সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইটে সময় ব্যয় করা উচিৎ ও অন্য নিবন্ধের উপর মন্তব্য প্রদান করা উচিৎ। আমি সবসময় নতুন কিছু  শিখতে প্রস্তুত- এধরনের মানসিকতা একজন সফল ব্লগারকে থাকতে হবে। অর্থাৎ সফল ব্লগারকে নিয়মিত শিক্ষার্থীর ভুমিকা পালন করতে হবে।

৪। লেখার মাঝে ভালোবাসা থাকতে হবেঃ-

আপনি যা লেখবেন তার মধ্যে যথেষ্ট ভালোবাসার ছোঁয়া থাকতে হবে। যদি আপনার লেখার উপার ভালোবাসা না থাকে ,তবে আপনি পাঠকের কাছে পৌছাতে পারবেন না। আপনি কি লিখতে ভালবাসেন সেটার উপর গুরত্ব দেওয়া জরুরী। যারা লিখতে ভালবাসে তাদের লেখার মাঝেই তা বুঝতে পারা যায়। আপনি আপনার পছন্দের বিষয়ের উপর লিখুন,অন্যথায় আপনার লেখার মাঝে কোন আবেগ দেখা যাবে না। উদাহরণ সরূপ- আপনি কবিতা পরতে ভালোবাসেন তো বিভিন্ন কবিতা নিয়ে লেখুন।

৫। সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবেঃ-

ব্লগিং এর পাশাপাশি সামাজিক সাইটগুলিতে নিজের ভুমিকা স্পষ্ট করে তুলতে হবে। কেননা বর্তমানে সামাজিক মিডিয়াগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। একজন সফল ব্লগারের সামজিক সাইটগুলিতে প্রচুর বন্ধু থাকে।

৬। নির্বোধের মতো ভুল করবেন নাঃ-

ভুল করা মানুষের স্বভাব, ভুল মানুষকে শিক্ষা দেয়। কিন্তু একই ভুল বারবার করাকেই নির্বোধ বলে। তাই একজন সফল ব্লগারকে এ ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। আপনি যদি সফলতার স্বাদ নিতে চান, তবে আপনাকে আগামীতে অবশ্যই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে যেন এ ধরনের ভুল না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

৭। আপনাকে সৃজনশীল ব্যক্তি হতে হবেঃ-

আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। কেননা সৃজনশীল লেখা সবাই পছন্দ করে। সৃজনশীল লেখা সর্বদা পাঠকের মন আকৃষ্ট করে। একজন সফল ব্লগারের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক রাস্তা হবে যদি একজন ব্লগার সৃজনশীলতার পরিচয় দেন।

৮। আত্মবিশ্বাস গড়ুনঃ-

সফলতা আপনাআপনি এসে ধরা দেয় না একে কেরে নিতে হয়। সফলতার যদি কোনো মূলমন্ত্র থাকে, তা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। কেউ যদি ভাবে, ‘আমি পারবো না’ ব্যস! নিশ্চিতভাবে সে ব্যর্থ। কারণ, সে চেষ্টা করে না বা চেষ্টা করার আগেই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। বিশ্বাসের মাত্রা হতে হয় খুব দৃঢ়। যদি মনে বিশ্বাস থাকে, লক্ষ্য যতোই কঠিন হোক না কেন সাফল্য নিশ্চিত।

৯। ইতিবাচক মনোভাবঃ

সফল ব্লগারের ইতি বাচক মনোভাব গড়ে উঠা দরকার। মাঝে মাঝে আপনি আপনার ব্লগ থেকে নেতিবাচক মন্তব্য পেতে পারেন। এটাকে খুব স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করা উচিৎ এবং এর জন্য বিতর্কে জড়ানো কক্ষনই উচিৎ নয়। ব্লগিং জগতে অনেক ধরনের মন্তব্য আসতেই পারে,তাই বলে থেমে থকলে চলবেনা। কেননা সমস্যা সৃষ্টি হয় সমাধানের জন্যে।

১০। ধৈর্য ও মানসিক প্রশান্তিঃ

সবশেষে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটি হল অসীম ধৈর্য ও মানসিক প্রশান্তি। যদি একজন সফল ব্লগার হতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে এবং কাজে মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে হবে। ধৈর্যশীলতা আপনাকে নতুন কাজের আগ্রহ জন্ম দেবে এবং প্রশান্তি বজায় থাকলে আপনার কাজটিকে একঘেঁয়ে মনে হবে না। ব্যর্থতা আসতেই পারে, তবে হাল ছাড়বেন না। অসীম ধৈর্য নিয়ে চেষ্টা করে যান। সফলতা ঠিক একদিন হাতের মুঠোয় এসে ধরা দেবে।

পরিশেষে বলা যায়, আপনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে, আপনার স্বপ্নকে আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে সুনিশ্চিত পরিকল্পনা, কর্মতত্পরতা ও দক্ষতা রেখে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের মেধাকে মূল্যায়ন করে একজন সফল ব্লগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
Previous Post
Next Post

0 comments: